কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদে দুবাইতে বিক্ষোভ করায় বিভিন্ন মেয়াদে ৫৭ বাংলাদেশি শ্রমিককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাদের মুক্তির জন্য আইনজীবী ওলোরা আফরিনকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
সোমবার (১২ আগস্ট) মিশন চিফ মুহাম্মদ মিযানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ তথ্য জানা যায়। এ বিষয়ে আইনজীবী ওলোরা আফরিনকে সাহায্য করবে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) অ্যাম্বাসি।
এর আগে ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পক্ষ থেকে (ফ্লাড) জানানো হয়, কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৫৭ বাংলাদেশি শ্রমিককে আইনি সহায়তা দিচ্ছে তারা।
ফ্লাডের আইন ও গবেষণা বিভাগের পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম জানান, এই শ্রমিকদের জন্য আইনি সহায়তা প্রদানের সময় আমরা জানতে পারি যে, এসব শ্রমিকের কেউই ওই দেশের আইন সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না। দেশপ্রেমিক এসব শ্রমিককে মুক্ত করার জন্য ফ্লাডের পক্ষ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত অ্যাডভোকেট জাকিয়া আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফ্লাডের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ছাড়িয়ে আনার বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করেন। এরই মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুটি ল ফার্মের সঙ্গেও তার মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে। এছাড়া ফ্লাডের পক্ষ থেকে সলিডারিটি সেন্টার, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, জেনেভায় হিউমান রাইটস কমিশনের কাছে সহায়তার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে ফাওজিয়া করিম অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট ও ফ্লাডকে সব আইনি সহযোগিতা প্রদান করার নিশ্চয়তা দিয়েছে।
এসব শ্রমিককে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ট্রায়াল করে সাজা প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের সহায়তায় তখন বাংলাদেশ দূতাবাস কোনো ভূমিকা রাখেনি, দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে। বর্তমানে ওই সব শ্রমিকের সহায়তার জন্য অ্যাডভোকেট জাকিয়া আক্তার বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা নম্বর জানতে চাইলে তারা জানান, তারা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এ বিষয়ে কাজ করছেন। কিন্তু শ্রমিকদের মুক্তির ব্যাপারে কোনো দৃশ্যমান ফল এখনো চোখে পড়েনি। তাই এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন ফ্লাড বর্তমান সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
ফ্লাডের বিবৃতিতে বলা হয়, ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফ্লাড)-এর পক্ষ থেকে আমরা এই বন্দিদের সর্বোত্তম আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আপনি যদি পরিবারের সদস্য হন বা তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত কাউকে চেনেন, তবে অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আমরা এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে তাদের পাশে আছি, তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে সাজা পান ৫৭ বাংলাদেশি। গত ২০ জুলাই স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় দুবাই, শারজাহ ও আজমানের বিভিন্ন এলাকার সড়কে বিক্ষোভের সময় তাদের আটক করা হয়। দুদিন পর ২২ জুলাই তাদের তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং বাকি ৫৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন স্থানীয় আদালত।