আওয়ামী লীগ হিন্দুদের একটি অংশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, টিক্কা খান, ইয়াহিয়া খান যেমন ফিরে আসেনি, শেখ হাসিনাও ফিরে আসবে না। কিন্তু হিন্দুদের একটি অংশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পরাজিত শক্তি ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগের পাতানো সাম্প্রদায়িক উসকানিতে কেউ পা দেবেন না।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আওয়ামী লীগবিরোধী হিন্দু সমাজের শান্তির পথে আমরা বাংলাদেশি র উদ্যোগে শান্তি সমাবেশে নিতাই রায় এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, এই গণ-অভ্যুত্থানে হিন্দু-মুসলিম, ছাত্র-জনতা সবাই যোগদান করেছে। এখানে কোনো সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। আজকে কোনো সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব হচ্ছে না। এই দ্বন্দ্ব হচ্ছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে।
এ সময় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশি হিন্দুদের অত্যাচার করেছে, জমি দখল করেছে। তারপরেও তারা মনে করে হিন্দু সম্প্রদায় আওয়ামী লীগের বড় শক্তি।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভয়ের কোনো কারণ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই সবার প্রতি সহানুভূতিশীল। একদিনে লাখ হিন্দুর সমাবেশ দেখেই বোঝা যায়- কারা তাদের উসকানি দিয়ে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এত বড় আন্দোলন শুধু কোটার জন্য নয়, ভাত-কাপড় ও গণতন্ত্রের অধিকারের জন্য হয়েছিল। আওয়ামী লীগ আন্দোলন দমনের জন্য রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছিল, যা সারা পৃথিবী দেখেছে। এই আন্দোলনে পাঁচ শ র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আমরা প্রতিটি গুলির হিসাব চাই। ভারত শেখ হাসিনাকে এখনো আশ্রয় দেয়নি উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, তাকে নিয়ে ভারত কী করছে তা আমরা জানি না।
বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইবোনদের বলব, আওয়ামী লীগ থেকে খুব সাবধান। যতবার তারা ক্ষমতা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে, তারা আপনাদেরকে ব্যবহার করেছে। যেটা আমরা নাসিরনগর, রামু, যশোর ও অভয়নগরে দেখেছি। আমাদের সময় তো এ রকম হয় নাই। আপনাদের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করলে কোনো বৈষম্য হবে না। দেশের ১৭ কোটি মানুষ একই অধিকার ভোগ করবে।
ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, আজকের অবস্থান কর্মসূচিতে হিন্দু-বৌদ্ধ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ ঐক্যবদ্ধ আছে। এটা হলো বাংলাদেশের প্রকৃত চিত্র। এই চিত্র ও বিজয়কে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নস্যাৎ করতে চায়। আপনারা প্রত্যেকে পাড়ায়-মহল্লায় পাহারা দেবেন, যাতে দুর্বৃত্তরা কোনো ষড়যন্ত্র করতে না পারে।
সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিএনপি র কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, অমলেন্দু দাস অপু, অপর্ণা রায়, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের তরুণ দে, জয়দেব জয়, ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ রায় সাহস প্রমুখ বক্তব্য দেন।