শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও পুলিশের কর্মবিরতিতে রাজধানী ঢাকার সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। টানা একসপ্তাহ পর অবশেষে সোমবার থেকে ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালন শুরু করেন। সময়ের সাথে সাথে স্বাভাবিক হচ্ছে রাজধানীর ট্রাফিক পরিস্থিতি। এত দিন রাজধানীর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে থাকা শিক্ষার্থীরা ফিরতে শুরু করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দীর্ঘ ছয় দিন পরে কর্মবিরতি শেষে ট্রাফিক পুলিশদের অনেকেই রাস্তা ও যানযট নিরসনে কাজ করা শুরু করেছেন। তাদের সহযোগিতায় করছেন স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, তিন বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর সদরঘাট, তাঁতীবাজার, বাবুবাজার, গুলিস্তান, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, শাহবাগ, পল্টন মোড়সহ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক শাহবাগ ও পুরাতন পল্টন মোড়ের সিগন্যাল। সেখানে ট্রাফিক পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সাথে যানযট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে শিক্ষার্থীরাও। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় কমছে নগরীর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে থাকা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা।
পুরানা পল্টন ও সচিবালয় এলাকার দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের সদস্য মো. হাফিজুর রহমান বলছেন, চলতি সপ্তাহের মাঝেই পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে ট্রাফিক পরিস্থিতি। আজ রাজধানীর প্রায় সকল এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে স্বাভাবিক ভাবে। এখন কোন ধরনের কোন অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীরা আমাদের সহযোগী করছে। তাদের সহযোগিতা ও আমাদের চেষ্টায় এখনো স্বাভাবিক আছে যান চলাচল। নগরবাসী নির্বিঘ্নে যাতায়াত করছে।
নীলক্ষেত মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের সাথে রাস্তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে সহযোগিতা করা শিক্ষার্থী মো. মাসুদ রানা বলেন, ট্রাফিক পুলিশদের সহযোগিতা করতেই আমরা শিক্ষার্থীরা রাস্তায় আছি।
পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে গেলে আমরা ক্লাসে ফিরব। তবে আজ শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমে গেছে। এর মূল কারণ বর্তমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো খুলে গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস- পরীক্ষা শেষ করে আবসর সময় রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সাথে কাজ করছে শিক্ষার্থীরা।
গত সোমবার থেকে ট্রাফিক পুলিশ কাজে যোগদান করায় সড়কে কমেছে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা। তবে এখনো কিছু কিছু সড়কে ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করছেন শিক্ষার্থীরা।এদিন রাজধানীর সব সড়কেই দেখা গেছে যানবাহনের উপস্থিতি। গণপরিবহনের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। সদরঘাট এলাকায় সড়ক শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন মহানগর মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা। জাকিয়া কালবেলাকে বলেন, রাস্তায় গাড়ির উপস্থিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজটও বেড়েছে। ট্রাফিক পুলিশ আছে। আমরাও তাদের সহযোগিতা করছি। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক পুলিশের সাথে কাজ করছে আনসার সদস্যরাও।
নীলক্ষেত মোড়ে যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি দায়িত্ব পালনকাল করছেন আনসার সদস্য সৈয়েদ আলী। তিনি কালবেলাকে বলেন, গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ রাজধানীতে বেরোচ্ছে যান চলাচল। সড়কের বিশৃঙ্খলা রোধে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে আমরা সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি।