বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শাখা ছাত্রলীগের কিছু কর্মীকে গণধোলাই দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আজ ৪৫তম ব্যাচের চূড়ান্ত সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়। দুপুর বেলা ১টা ৩০ মিনিটে ছাত্রলীগের ১১ জন সক্রিয় কর্মী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ক্যাম্পাসে ঢুকলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ঘিরে ফেলে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকলে সেখানে হট্টগোল তৈরি হয়। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ভুয়া স্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে সাতরাস্তা মোড়ে নিয়ে যায়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডি পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়নি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসহ নাবিস্কো মোড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের সঙ্গে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে এসব ছাত্রলীগের সদস্যরা। হল থেকে ছেলেদের জোরপূর্বক প্রোগ্রামে নিয়ে যাওয়া, বিভিন্নভাবে টর্চার-মারধর করা, চাঁদাবাজিসহ হলে মাদকের জোগান দেওয়ার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে।
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এই ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। পুরো ক্যাম্পাস তাদের দখলে রেখে তারা ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতো। তাদের ইচ্ছার বাইরে কোনো শিক্ষার্থী কথা বলতে পারতো না।
এর আগে ২১ আগস্ট ৪৫তম ব্যাচের পক্ষ থেকে একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। সমসাময়িক আন্দোলনের সময়ে যারা ছাত্রদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো এবং ছাত্রলীগের সমর্থনে কাজ করেছিল সেই হিসাবে তালিকা করা হয়। তালিকাটি বিভাগের রিভিউ, হল রিভিউ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়কালের কার্যক্রমের ভিত্তিতে এক্সট্রিম ও এপোলজি দুটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে। এক্সট্রিম ক্যাটাগরিরে যারা আছে তাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ প্রমাণ এবং সাক্ষী রয়েছে উল্লেখ করে ১১ জনের তালিকা প্রকাশ করে। বলা হয়, তারা লেভেল-৪, টার্ম-২ এর টার্ম ফাইনালে অংশগ্রহণ করতে না দেয়াসহ অ্যাকাডেমিক সকল ক্ষেত্রে (প্রজেক্ট এবং অ্যাটাচমেন্ট প্রেজেন্টেশন) এ বয়কট করা হবে।
এপোলজি ক্যাটাগরিতে নিহ্নিত শিক্ষার্থীদের জন্য নিঃশর্তভাবে প্রকাশ্যে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চাইতে হবে জানানো হয়। এপোলজি ক্যাটাগরির কেউ ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে এক্সট্রিম ক্যাটাগরির আওতাভুক্ত করা হবে। বুধবার (২৮ আগস্ট) রাতে এপোলজি ক্যাটাগরিতে থাকা শিক্ষার্থীরা বুটেক্স ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন গ্রুপে ক্ষমা চান।