প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণভবনের দরজা খোলা। কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমি বসতে চাই, তাদের কথা শুনতে চাই। আমি সংঘাত চাই না।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে গণভবনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রস্তাবিত পেনশন ব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে গণভবনে এক জরুরি বৈঠক ডেকে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসতে দলীয় তিন নেতাকে দায়িত্ব দেন তিনি।
দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই।
নাহিদ বলেন, যখন আমরা ডিবি হেফাজতে ছিলাম, তখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা এই প্রস্তাবের প্রতিবাদে ডিবি হেফাজতে অনশন করেছিলাম।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২ আগস্ট) এক ভিডিও বার্তায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবিতে শনিবার (৩ আগস্ট) সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার (৪ আগস্ট) থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হলো।
আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ঘোষণা করছি, আগামীকাল (৩ আগস্ট) সারা দেশের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায়, প্রতিটি জায়গায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। আগামীকালের পর থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন পালিত হবে।
তিনি বলেন, রোববার (৪ আগস্ট) থেকে এ সরকারকে কোনো ট্যাক্স দেওয়া হবে না। এ সরকারের কোনো অফিসে যাওয়া হবে না। সরকারকে সর্বাত্মক অসহযোগিতা করা হবে।
এ সময় গ্যাস-বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। সব নাগরিককে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানিয়ে হান্নান আরও বলেন, সারা দেশের ছাত্র-নাগরিক, অভিভাবক, মা-বোন যে যেখানে আছেন আগামীকাল (৩ আগস্ট) থেকে প্রত্যেকে রাজপথে নেমে আসবেন। কেউ বাড়িতে বসে থাকবেন না। এটা আপনাদের দায়বদ্ধতা, প্রতিটি শহীদের প্রতি আপনাদের এই দায়বদ্ধতা আছে। প্রয়োজনে আপনি আপনার ভবনের নিচে এসে অবস্থান করবেন, তবুও রাস্তায় থাকবেন। প্রত্যেক দল, প্রত্যেকটা মতের মানুষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান, প্রত্যেকে রাস্তায় নেমে আসবেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আপনারা জনগণের পাশে দাঁড়ান। আপনারা আর গুলি ছুড়বেন না। আমরা আপনাদের ভাই, আপনাদের সন্তান, আপনাদের অনুজ। আপনারা এই সরকারকে অসহযোগিতা করুন। আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল, শান্তিপূর্ণ থাকবে।