চট্টগ্রামের রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুটি মামলাই আদালতে করা হয়েছে। আদালতে ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদে দায়ের করা মামলায় ২৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) রাউজান জেলার ১১নং পশ্চিম গুজরা ইউনিয়র পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডে বাসিন্দা মৃত মহব্বত আলীর ছেলে সাবেক চেয়াম্যান মোহাম্মদ সিরাজদৌল্লাহ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বাকি আসামিরা হলেন মো. শাহবউদ্দিন আরিফ ( ৫৪), মো. সুজাতুল ইসলাম ফাহিম (৩৫), টনী বড়ুয়া (২৫), লিটন দে (২৫) ,মো. আনোয়ার (২৭), মো. মাসুদ (২৬), আজম খান (৩২), মো. সাদ্দাম (২২), সালাউদ্দিন মিন্টু (২২), সাইফুল ইসলাম লিটন (২৮), মো. তৈয়ব প্রকাশ কালা তৈয়ব (৪২), মো. জামাল প্রকাশ কালা জামাল (৪৬), অংশুমান বড়ুয়া (৫৪), আব্দুল মান্নান (২৭), মো. অরিফ (৪০), মো. সাজ্জাদ (২২), মো. হাবিবুর রহমান (২৩), মো. আসলাম (৪০), মো.ফারুক (৩৪) ও মো. তানভীর (২৪)।
মামলার এজাহারে চট্টগ্রামের রাউজানের উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিরাজদৌল্লাহ তাঁকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সোহাইল লুৎফুল হাসনাত।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তার পরিচিত এমদাদের ভাগ্নির বাড়িতে দাওয়াতে যান। সেখানে সন্ত্রাসীরা তাকে আটকের চেষ্টা করলে জানতে পেরে দ্রুত বাড়িতে চলে আসেন। পরদিন সকাল ১১টায় তাকে সাবেক সংসদ সদস্যের নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে প্রবেশ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। তাকে বাঁচাতে স্ত্রী-কন্যা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও লাঞ্ছিত করে। আসামি মো. মাসুদ তাদের আলমারির তালা ভেঙে ৭ ভরি স্বর্ণালংকার এবং আসামি লিটন দে ১৫ হাজার টাকা লুট করে৷ এছাড়া বাড়ির মূল্যবান আসবাব ভাঙচুর করে চার লক্ষ টাকার ক্ষতি করে।
একই সময় ইউপি চেয়ারম্যানকে অপহরণ করে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামাবাদ সাকিনের নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের বাড়ির পেছনে একটি টিনশেড ঘরে আটকে রাখে। এরপর তার মাথার চুল ও মুখের দাঁড়ি ফেলে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে দেখানো হয়। এরপর সেই ছবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়।
এ ছাড়া আসামি টনি বড়ুয়া মৃত্যুর হুমকি দিয়ে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে তার ভাই তিন লাখ টাকা এনে টনির হাতে তুলে দেয়। রাত ৮টার দিকে বাদীকে আসামি শাহাবুদ্দিন আরিফের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর একটি সিএনজিতে বসিয়ে আসামি লিটন দে পুরাতন একটি অস্ত্র আসামি আনোয়ার একটি গুলি এনে ওই সিএনজির পেছনে রাখে। এরপর রাউজান থানার উপপরিদর্শক অজয় দেবনাথ এবং ইলিয়াছ বাদীকে আরেকটি সিএনজি অটোরিকশায় করে থানায় নিয়ে যায়। এসআই অজয় দেবনাথ বাদীকে দিয়ে তার স্ত্রীর কাছে ফোন করিয়ে ১০ হাজার টাকা আদায় করেন।
একইবছরের ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১১আতায় রাউজান থানায় অস্ত্রসহ ছবি তুলে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করে বাদীকে আদালতে পাঠানো হয়।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সোহাইল লুৎফুল হাসনাত বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজদৌল্লাহকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ে অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় রাউজানের সাবেক এমপি ফজলে করিমসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে।আদালত মামলার আবেদন আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
অপরদিকে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন রাঙ্গনিয়া উপজেলার বাসিন্দা মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন (৪০)। এ মামলায় ৮৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়াও নগরীর পাঁচলাইশ থানায় হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।