স্বামী-স্ত্রী – সন্তান তিনজনই উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। স্বামী প্রধান শিক্ষক পদে আর স্ত্রী আয়া ও পিছিয়ে নেই ছেলে ও মোঃ মাহফুজুর রহমান (মাফুজ)তাকে দেওয়া হয়েছে পিয়ন পদে চাকরি । তবে ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেন না তারা। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দাপটে মাসের পর মাস দায়িত্ব পালন না করেই নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন এই দম্পতি।
এমনই ঘটনা ঘটেছে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার ইসলামপুর সদর ইউনিয়ন কাঁচিহারা উচ্চ বিদ্যালয়ে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম হান্নান কাজী । তিনি ইসলামপুর সদর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি,সেই দাপটে চালাতেন শিক্ষা খাতে নানা অনিয়ম । তার স্ত্রী ও একই বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (আয়া) ছেলেও চতুর্থ শ্রেণীর পিয়ন। বিদ্যালয়টির ১২জন শিক্ষক ও ৬জন চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী নিয়ে০১৭৯ পরিচালিত হচ্ছে। মোট ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা ১৮০জন, উপস্থিতি হার একদম নগণ্য।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক দম্পতি অপসারণ দাবিতে গত (২৫ আগস্ট) রোববার শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর মনিরুজ্জামান বাংলাদেশী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি এক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ কারী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কাচিহারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হান্নান কাজী ২০২২ সালের নভেম্বরে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য (শিক্ষক প্রতিনিধি) হওয়ার সুবাদে প্রভাব খাটিয়ে তার স্ত্রীকে একই প্রতিষ্ঠানে আয়া পদে নিয়োগ দেন। এরপর প্রায় দুই বছর ধরেই,আয়ার স্বামীর ও পিয়নের পিতার প্রভাবে যোগসাজশে কাঁচিহারা উচ্চ বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়েই নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। তারা মাসে মাত্র ১-২ দিন উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের সই দিয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নবম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে প্রথমবাংলা কে বলেন, ‘আয়া,ও পিয়ন, ঠিকমতো বিদ্যালয়ে আসেন না। কখনো এলে তার সঙ্গে কথা বলা যায় না। তাকে ‘খালা’ ডাকলে রেগে যান, ‘ম্যাডাম’ ডাকতে বলেন। কক্ষ পরিষ্কার করা তার দায়িত্ব হলেও তিনি কখনোই তা করেন না। ছাত্রদের দিয়েই করান। কেউ পানি চাইলেও তার স্বামী হান্নান স্যার এসে ছাত্রদের ভয় দেখান। পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।”
নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রথমবাংলা কে বলেন,ছেলে ও আয়া এবং তিনি একসঙ্গেই চাকরি নিয়েছেন। কিন্তু তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করলেও আয়া অনুপস্থিত থাকেন। শুধু মাস শেষে হাজিরা খাতায় সই করে বেতন তুলে নেন। আয়ার কাজগুলোও অন্য কর্মচারীদের করতে হয়।
যে কোন বিষয় অফিস সহকারী বিপ্লব সহযোগিতা করেন প্রধান শিক্ষককে বলে এলাকা বাসী জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রধান শিক্ষক হান্নান কাজী ও পিয়ন ছেলে এবং তার স্ত্রী আয়ার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কাচিহারা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক হান্নান কাজী কে ফোনে কল করা হলে তিনি জরুরি মিটিংয়ে আছেন বলে জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা র সাথে মুঠোফনে একাধিক বার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম প্রথমবাংলা কে বলেন,আমি একটা অনুলিপি পেয়েছি, উপর মহলের নির্দেশে, এ বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।