তিস্তার তীব্র ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন লালমনিরহাটের মানুষ। জেলার ৫ উপজেলার অন্তত ১৪টি পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে তিস্তা নদীর তীরবর্তী প্রায় শতাধিক বসতভিটা বিলীন হয়েছে।
সরেজমিনে তিস্তা নদী ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তৃতীয় দফা বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা, রাজপুর ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্ট এবং জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্টে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবর্ধন চর এলাকার ৮টি বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বিলীন হয়েছে মসজিদ মন্দিরসহ অন্যান্য স্থাপনাও। হুমকিতে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা।
এদিকে বসতভিটা হারা মানুষ ঠাঁই নিচ্ছেন অন্যের জমিতে। ভাঙন কবলিতদের অভিযোগ, ভাঙনরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সময় মতো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রতিবছরই নদী ভাঙনের শিকার হতে হচ্ছে তাদের। তবে ইতোমধ্যে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে।
গত মাসে দুইবার ভারতের উজানে ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে তিস্তায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে নদীর পানি নেমে গেলেও নদী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ। নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি।
নদী ভাঙনের শিকার তিস্তা গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ জানান, তিস্তার পানি নেমে যেতে না যেতেই আমার আবাদি জমি ও বসতভিটা বিলীন হয়েছে। বাড়ি সরিয়ে অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছি।
সদর উপজেলা খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের নদী ভাঙনের শিকার আজগর আলী বলেন, যেটুকু আবাদি জমি ছিল তা এখন তিস্তার পেটে। নদী এখন বসতবাড়ির কাছে। বাড়ি সরিয়ে কোথায় নিয়ে যাব? আমারতো আর কোনো জমি নেই।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, তিস্তার গর্ভে পলি জমায় পানি ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। ফলে অল্প পানিতে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর আবার শুরু হয় ভাঙন। এভাবে প্রতিবছর ভূমিহীন ও গৃহহীনের সংখ্যাও বাড়ছে। তবে ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করা হয়েছে।