মোঃ এনামুল হক ( জামালপুর জেলা) প্রতিনিধিঃ
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের বরুল গ্রামের মধ্য দিয়ে একটি বাঁশ ও কাঠের সেতুতে পাল্টে গেছে কয়েক গ্রাম মানুষের ভাগ্য। সেতুটি নির্মাণের ফলে ৫/৭টি গ্রামের মানুষের উপজেলা ও জেলার সঙ্গে যোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে। উপজেলার কৃষি প্রধান একটি ইউনিয়ন বেলগাছা । এ ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে যমুনা নদের একটি শাখা থেকে একটি খাল বয়ে গেছে। খালটির এক প্রান্তে বরুল ও চর মুন্নিয়াু উপর প্রান্তে জিগাতলা গ্রাম ।
দীর্ঘদিন এ গ্রামের মধ্যকার খালে খেয়া নৌকার প্রচলন ছিল। ২০০৫ সাল পর্যন্ত ওই গ্রাম তিনটির আশপাশের ৫/ ৭টি গ্রামের লোকজন খেয়া পার হয়ে উপজেলা শহরসহ আশপাশের হাট-বাজার, স্কুল-মাদ্রাসা কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা যাতায়াত করত।
২০২২ সালের বন্যার পর খালের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে এলাকাবাসী। সেটিও গত বছর ভেঙে যায়। এরপর এলাকাবাসীর দুর্ভোগ বেড়ে যায়। অবশেষে বাঁশ ও কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। এতে এলাকাবাসীর স্বস্তি ফিরেছে। তবে এখন ওই এলাকায় একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি করেন তাঁরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, যমুনা নদের শাখা খালের পশ্চিম পাশে বেলগাছা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বরুল গ্রাম। পূর্বপাশে চরমুন্নিয়া গ্রাম ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড। এই দুই ওয়ার্ডের সংযোগ সড়কে খালের ওপর পাঁচ ফুট চওড়া ২৬৯টি কাঠের তক্তা দিয়ে এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অর্থায়নে গত জুন মাসের মাঝামাঝি সেতুটি তৈরি শুরু হয়। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে সেতুটির কাজ শেষ হয়।
এলাকাবাসী জানায়, এ খাল পার হয়ে বেলগাছা ইউনিয়নের উত্তর বরুল,চর মুন্নিয়া,জিগাতলা,বরুল দেওয়ানপাড়া, বরুল আনন্দ বাজার ,দক্ষিন বরুল বরুল জহির দেওয়ানির গ্রাম চর মুনিয়া, মুন্নিয়া বাজার, মুন্নিয়া আজম আলী গ্রাম, মুন্নিয়া আরমারি পারা, কাশেম চেয়ারম্যানের গ্রামের লোকজন সহ উপজেলা শহরে যাতায়াত করে। প্রতিদিন শত শত লোক এ খাল দিয়ে পারাপার হন।
উত্তর বরুল গ্রামের বাসিন্দা নজরুল হোসেন বলেন, তাঁদের গ্রামের অধিকাংশ লোকের জমি খালের ওপারে চর মুন্নিয়া গ্রামের মাঠে। তাঁদের দিনে বেশ কয়েকবার এ খাল পারাপার হতে হয়। এ খাল পার হয়েই বাজার-ঘাট করতে হয়। কাঠের সেতু তৈরি করায় তাঁরা অনেক খুশি।
মুন্নিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী রুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘এ সেতু হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। আগে অনেক পথ ঘুরে আমাদের স্কুলে যেতে হতো। এখন সহজেই খাল পার হয়ে যেতে পারছি স্কুলে।
বরুল গ্রামের বাসিন্দা ও সেতুটির তত্ত্বাবধানকারী মনিরুজ্জামান মনি জানান, এ সেতুটি তিন হাত চওড়া, ১২০ হাত লম্বা। আমাদের ইউনিয়নের দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ মালেক তার নিজস্ব অর্থায়নে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে এ সেতুটি নির্মাণ করেছেন। ইতিমধ্যে সেতুটি চালু হয়েছে।
বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মালেক বলেন, বেলগাছা ইউনিয়নটির মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে যমুনা নদী।নদীর দুই পাশ দিয়ে ভোটারা বসবাস করে।যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক লাজুক। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি চেয়ারম্যান হিসাবে নিজস্ব অর্থায়নে এ সেতুটি নির্মাণ করেন। এতে প্রায় দুই লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। ভবিষ্যতে একটি পাকা সেতু নির্মাণের চেষ্টা করবেন।