রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিসের দু টি ইউনিট রওনা হলেও পুলিশ প্রটেকশনের অভাবে পৌঁছতে পারছে না। এ ঘটনায় ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র ্যাব, পুলিশ ও বিজিবি কাজ করছে। সেইসঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ছুড়ে কোটা আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এরপর থেকে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও কোটা আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার জানান, টোল প্লাজায় আগুন লাগার খবর পেয়ে দুটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশ প্রটেকশনের অভাবে রাস্তায় আটকে আছে।
যাত্রাবাড়ী থানার এসআই আমিনুল হক বলেন, টোলপ্লাজায় আগুন দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হচ্ছে। সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, যাত্রাবাড়ী থানা থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ। অন্যদিকে, হানিফ ফ্লাইওভারের কুতুবখালী টোলপ্লাজা, মোটরসাইকেল ও সিএনজি পুড়িয়ে দিয়েছে আন্দোলনকরীরা। এর আগে যাত্রাবাড়ী থানায় হামলার ঘটনা ঘটে। থানার সামনে প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানা থেকে কুতুবখালি পর্যন্ত মহাসড়ক বন্ধ রয়েছে। কয়েকটি মোটরসাইকেল ও সিএনজি পুড়িয়ে দিয়েছে আন্দোলনকরীরা।
এর আগে দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন কোটা আন্দোলনকারীরা। এতে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায়-দফায় সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের সময় শিশুসহ ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পরে আহতের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানান, শনির আখড়া থেকে আসা আহত ছয়জনকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় কোটা আন্দোলনের ঘটনায় অন্তত ৫২ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এদের মধ্যে আন্দোলনকারী, ছাত্রলীগ সদস্য, পুলিশ ও সাংবাদিক রয়েছে।
এদিকে আগামীকাল সারা দেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সারা দেশে সম্পূর্ণ শাটডাউন পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে এক এক বিবৃতিতে তিনি এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর পুলিশ, বিজিবি, র ্যাব, সোয়াটের ন্যাক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত ও এক দফা দাবিতে আগামীকাল (১৮ জুলাই) সারা দেশে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করছি।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠানের দরজা খুলবে না, অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সড়কে কোনো গাড়ি চলবে না। সারা দেশের প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাচ্ছি আগামীকালকের কর্মসূচি সফল করুন।